Friday , May 17 2024
Breaking News
Home / Crime / দুই বছর ধরে টয়লেটে বন্দি ছিলো সুজিত, উদ্ধারের পর বেরিয়ে এলে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য

দুই বছর ধরে টয়লেটে বন্দি ছিলো সুজিত, উদ্ধারের পর বেরিয়ে এলে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য

সুজিত দাস (২৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপাড়া এলাকার নরেন্দ্র দাসের ছেলে। পেশায় জেলে। গত দুই বছর ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে থানা থেকে ২ শত গজ দূরে তাদের বাড়ির নোংরা টয়লেটে দরজার তালা ভেঙে উদ্ধার করেছেন নাসিরনগর থানার পুলিশ। পরিবারের দাবি, সুজিত মানসিক ভারসাম্যহীন এবং যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমি আমাদের এবং অন্যদের নিরাপত্তার জন্য তাকে টয়লেটে তালা দিয়ে রেখেছিলাম। পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, জেলে পরিবারে জন্ম নেওয়া সুজিত নিয়মিত নদীতে মাছ ধরতেন। সেই মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। একদিন সুজিত হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। সুজিতকে দীর্ঘদিন এলাকায় দেখা যায় না।

বিষয়টি ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে চলে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে মনে করেন সুজিত কি বেঁচে আছেন? নাকি মারা গেছে। কেউ কেউ বলতে থাকেন সুজিত হয়তো ভারতে চলে গেছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে নাসিরনগর থানা পুলিশ খবর পায় যে, থানা থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে সুজিতের বাড়ির একটি নোংরা অন্ধকার টয়লেটে গত দুই বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে সুজিত। সুজিতকে মাঝে মাঝে টয়লেটের নীচের অংশে একটি ছোট ফাঁকা দিয়ে খাবার দেওয়া হয়। সুজিতও দিনরাত ল্যাট্রিনের মেঝেতে শুয়ে সেই ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। মাঝে মাঝে চিৎকার করে।

আর এভাবেই ওই ল্যাট্রিনের ভেতরে কেটে গেছে সুজিতের দুইটি বছর। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে সুজিতদের বাড়িতে গিয়ে বন্দি দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হন। হতবাক ও বিস্মিত হত নাসিরনগরের লোকজন। এবং সকলেই এমন অমানবিক কান্ডের পেছনে কি কারণ আছে? তদন্ত সাপেক্ষে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। পুলিশ ওই টয়লেটের তালা ভেঙে ভেতর করে সুজিতকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, গত পাঁচ বছর আগে সুজিত একটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল।

এরপর থেকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পাগলের প্রলাপ ভাংচুর ও লোকজনকে মারধর করতে থাকে। আবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলছেন, সম্পত্তির কারণে সুজিতকে এভাবে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। সুজিতের মা ও মা আরতি রানী জানান, মাথায় সমস্যা থাকায় যাকে দেখে তাকেই মারধর করতে থাকে। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। একটি হত্যা মামলার আসামিও। নিজেদের ও অন্য লোকজনের নিরাপত্তার জন্য ল্যাট্রিনে আটকে রাখতে বাধ্য হয়েছি।

এ প্রসঙ্গে তার ভাই অনিল দাস বলেন, সুজিত কাউকে হত্যা করলে দায় কে নেবে? নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা বলেন, ল্যাট্রিন থেকে মানুষের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এ ধরনের খবরের সত্যতা যাচাই করতে তিনি ওই বাড়িতে যান। জানতে পারলাম সুজিত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ল্যাট্রিনে বন্দী। যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরে পরিবার ও চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Nasimul Islam

Check Also

ভোটকেন্দ্রে ২ পুলিশকে পেটাল প্রার্থীর সমর্থকরা

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। এ সময় ছবি তুলতে যাওয়ায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *