ময়মনসিংহে এক নারী নেত্রীর বিরুদ্ধে অরেক নেত্রীকে জিম্মি করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ, মারধর ও পরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৬ মে) বিকেলে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপ্না খন্দকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা শাখার সদস্য মোছা. রানী মালা। এ ঘটনায় স্বপ্না খন্দকারসহ ছয়জনকে আসামি করে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাও করেছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পূর্ব পরিচয়ের জের ধরে অন্তত দুই বছর আগে ময়মনসিংহ শহরের স্বপ্না খন্দকারের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানোর পর তাকে জোর করে বিবস্ত্র করে এক ব্যক্তির সঙ্গে বসিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ওই পুরুষের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নেয়। একই সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি নিয়ে বিভিন্ন সময় নগদ টাকাও নেয়। বিষয়টি জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ককে জানানোর কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন রানী।
এ অবস্থায় বিচার চেয়ে গত ২ মে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন রানী। এতে স্বপ্না খন্দকার, তার সহযোগী কাজী বাবু, হীরা, মশিউর রহমান রানাসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রানী মালা বলেন, আমি স্বপ্না খন্দকারের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার শিকার। আমার মতো আরও অনেক নারী স্বপ্নার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ভয়ে স্বপ্নার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছেন না। আমি চাই না অন্য কোনো নারী এই ধরনের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হোক। স্বপ্না খন্দকার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে এ ধরনের অপরাধ করে আসছেন। মূলত রাজনীতির আড়ালে এ ধরনের অপরাধের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই তার পেশা ও নেশা। এভাবেই তিনি এই শহরে বেশ কিছু বাড়ি, গাড়ি ও ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স তৈরি করেন।
তিনি আরও বলেন, এই সংবাদ সম্মেলনের পর আমিও আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। তবে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং স্বপ্নার সকল অপরাধের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। এছাড়াও, আমার সাথে যা ঘটেছে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে স্বপ্না খন্দকার বলেন, আমার বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে। আমার বাসায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেখানে দেখা গেছে পুরুষকে নিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ঢুকেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। মেয়েটা আমার বাসায় ভাড়া থাকতো। সেখানে প্রতিনিয়ত পুরুষ নিয়ে যেত। আমি বিষয়টি জানতাম না। যখন আমি জানলাম তখন মাইর দিয়ে তাকে বের করে দিয়েছিলাম।
তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কেন এ বিষয়ে কোনো সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে স্বপ্না খন্দকার বলেন, বেশ কিছু নির্বাচনী ব্যস্ততার কারণে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি বিলকিস খানম পাপড়ি বলেন, ঘটনাটি ওই সময়ই রানী আমাকে জানিয়েছিল। পরে আমি কেন্দ্রকে অবহিত করেছি। মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডেইজি সারোয়ার বলেন, প্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষী কাউকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে না।