ঈদের ছুটিতে সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়ি গিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ পরিদর্শক মো. শিহাব হোসেনের বিরুদ্ধে। জানা যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়োখালা বাজার ব্রিজ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ মৎস্য ঘেরের অফিসে গত ১৫ এপ্রিল এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগে বলা হয়েছে, পুলিশ পরিদর্শক মো. শিহাব হোসেন তার ভাই সাইফুর রহমান হিল্টু ও বাবা মজনুহার মাস্টারকে সঙ্গে নিয়ে ৎস্য ঘেরের অফিসে ঢুকে ঘের মালিক মো. মহিদুল ইসলাম মিলনকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তারা ঘেরের অফিস থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যান।
মহিদুল ইসলাম মিলন থানায় মামলা করলেও পুলিশ কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করে না। অবশেষে তিনি আদালতে মামলা করেন।
এদিকে, অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক মো. শিহাব হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ঘের মালিকের সাথে তার জমির ব্যাপারে বিরোধ ছিল। ওইদিন তারা জমির বিষয়ে কথা বলতে গেলে মহিদুল ইসলাম মিলন তাদের সাথে অমার্জনীয় আচরণ করেন। তখন তারা আত্মরক্ষার জন্য মহিদুল ইসলাম মিলনকে মারধর করেন। তবে তারা কোনো টাকা ছিনতাই করেননি।
মামলায় পুলিশ পরিদর্শক মো. শিহাব হোসেন, তার ভাই সাইফুর রহমান হিল্টু ও বাবা মজনুহার মাস্টারকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শিহাব হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত যা সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ১নং ফাঁড়িতে কর্মরত অবস্থায় ক্লোজড হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত আছেন।।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে মো. আব্দুল হক উল্লেখ করেন, আমার ছোট ভাই মাহিদুল ইসলাম মিলন শিরনগর টুঙ্কিরবিলে বিসমিল্লাহ মাছের ঘের প্রকল্পে ২৪০ বিঘা মৎস্য ঘেরের শেয়ার হিসেবে মাছ চাষ করে আসছেন। পুলিশ পরিদর্শক শিহাব হোসেনও ওই মাছ ধরার ঘেরের অংশীদার। মাছের ঘেরের খুঁটিনাটি ও লোকসানের টাকা নিয়ে আমার ভাইসহ ঘেরের অন্য মালিকদের সঙ্গে তার অহেতুক ঝগড়া হতো।
তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, পুলিশ পরিদর্শক শিহাব হোসেন প্রায়ই আমার ছোট ভাইকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতেন। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরিদর্শক শিহাবের নেতৃত্বে পেরিমিটার অফিসে প্রবেশ করে আমার ভাইকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তাদের হামলায় আমার ছোট ভাই ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হামলাকারীরা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। অফিস ব্যাগে রাখা হয়েছে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আহত মাহিদুল ইসলাম মিলন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন এবং বর্তমানে বাড়িতে আছেন বলে জানান তার ভাই মোঃ আব্দুল হক।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক মো. শিহাব হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে অভিযোগ যথেষ্ট মনে হয়নি বলে মামলা নেওয়া হয়নি। তবে ঘটনার তদন্ত চলছে।
সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেছেন, অভিযোগ যদি সত্যিকার অর্থে প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।