বাবা হওয়ার গুঞ্জন নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। ঢাকার মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া ইসলাম তিশা (১৮) বিয়ে করেন ৬০ বছর বয়সী খনি শ্রমিক মোশতাক আহমেদকে। এবার তারা দুজনই লাইভে এসে বাবা-মা হওয়ার খবরের বিষয়ে মুখ খুললেন।
বাবা হচ্ছেন মুশতাক, মা হচ্ছেন তিশা- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। খন্দকার মোশতাক বুধবার বলেন, এমন কোনো খবর নেই। জীবনের নিয়ম মেনে জীবন এগিয়ে চলেছে। আল্লাহ যদি এমন সুযোগ দেন, আমি সবাইকে জানিয়ে দেব। যেভাবে গুজব ছড়িয়েছে, তাতে করে মাইক দিয়ে গোটা শহরকে জানাবো, ঘোড়ার গাড়ির মিছিল বের করবো।
আলোচিত হয়েছিল অসম বয়সের দুই মানুষের প্রেমের গল্প। মোশতাক তিশার বাবার থেকে আট বছরের বড়। তবে এতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। তাদের গল্প সিনেমা বা উপন্যাসের গল্পকে হার মানায়।
১৮ বছর বয়সী তিশা জানান, ভালোবেসে ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন ৬০ বছর বয়সী মোশতাক আহমেদকে। তিনি জানান, স্বামীকে নিয়ে তিনি খুব খুশি। বিয়ের আগে তাদের তেমন কেউ চিনত না, কিন্তু এখন তারা বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে।
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদের সঙ্গে তিশার প্রেমের সূত্রপাত ফেসবুকে। মোশতাক তিশাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়।
কথাবার্তা হয়েছিল ফেসবুকে নতুন পরিচিত কারও সঙ্গে যেমনভাবে হয়, ঠিক তেমনভাবেই। প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকার আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের নবীনবরণ উৎসবে। সেখানে তিশা গিয়েছিলেন নতুন ছাত্রী হিসেবে। আর মুশকাক খন্দকার ওই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য রূপে।
এই সাক্ষাতেই ধীরে ধীরে মজবুত হয়। পরিণত হয় প্রেমে। তিশাকে মুশতাক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এই সম্পর্কের পরিণতি ঠিক কী হতে চলেছে?
জবাবে তিশা জানান, তিনি বিয়ে করতে রাজি। তবে তিশার বাড়ির লোক এই সম্পর্কটা মেনে নেননি। তিশাকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখেন তার বাবা-মা। কিন্তু বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান তিশা। ঠাকুরগাঁও থেকে তিনি চলে যান ঢাকায় খন্দকার মুশতাকের কাছে। সেখানে ধর্মীয় রীতির পরে আইন মেনে বিয়ে করেন তারা।
তাতেও তিশার মা-বাবা এই সম্পর্ক মেনে নেননি। তারা থানায় খন্দকার মুশতাকের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ আনেন। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন তিশাকে কিছু দিন হোমে কাটাতে হয়।
মুশতাকের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন খান জানান, তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম একটি মামলা করে তাকে নাবালিকা হিসাবে দাবি করেন। কিন্তু আদালতে তিশা এসে জবানবন্দি দিয়েছেন যে, স্বেচ্ছায় তিনি মুশতাককে বিয়ে করেছেন।
বিচারককে তিশা বলেন, তিনি একজন মেয়ে। স্বেচ্ছায় স্বামীর সঙ্গে থাকতে চায়। স্বামীর সাথে তার বয়সের ব্যবধান ৪০ বছরেরও বেশি। তবে তিশার দাবি, স্বামীর সঙ্গে সুখেই সংসার করছেন তিনি।
খন্দকার মোশতাকের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নতুন মা তিশার চেয়ে বয়সে বড় তিনি। সম্পর্কের ক্ষেত্রে মা হলেও তিশা সেই মেয়েকে বন্ধুর মতো মানিয়ে নিয়েছেন।
তিশা গণমাধ্যমকে বলেন, স্বামীকে বুড়ো বলে মনে করেন না তিনি। তার স্বামীর সেই মনটা ৩৭ বছরের তরতাজা যুবকের মতো। তাই বয়সের ব্যবধান তাদের সম্পর্কে বাধা হয়ে ওঠেনি। স্বামীর অনুপ্রেরণাতেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিশা
অনেকেই তিশা টাকার জন্য বিয়ে করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন। তবে মোশতাক বলেন, ‘তিশা ভালো পরিবারের সন্তান। সে আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। এখানে টাকার লোভের প্রশ্নই আসে না।