Friday , May 17 2024
Breaking News
Home / Exclusive / কারাগারের বাইরে জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থাকতাম: সর্বস্বান্ত হওয়ার পর জল্লাদ শাহজাহান

কারাগারের বাইরে জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থাকতাম: সর্বস্বান্ত হওয়ার পর জল্লাদ শাহজাহান

উল্লেখিত জল্লাদ শাহজাহান দাবি করেন, কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তিনি বারবার প্রতারিত হয়েছেন। বিয়ে করে তিনি সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্ত্রী ও শাশুড়ির কাছে জল্লাদ শাহজাহানের প্রতারণার বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টাইমস পিআর।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহজাহান বলেন, কারাগার থেকে বেরিয়ে ২৩ বছরের এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু বিয়ের প্রায় দুই মাস পর আমার স্ত্রী ও শাশুড়ি আমার জমানো প্রায় ১৭ লাখ টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়। সে আমার নামে যৌতুকের মামলাও করেছে।

নিজের বিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কেরানীগঞ্জের বাবুবাজারে থাকতে শুরু করি। চায়ের দোকান আছে। একদিন অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির ভিতর একটা ভ্যানিটি ব্যাগ পেলাম। পরে আমি ব্যাগের মালিক ২৩ বছর বয়সী সাথী আক্তার ফাতেমার সাথে যোগাযোগ করে তা ফেরত দেই। পরে তাদের পরিবারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক হয়। তারপর আমাকে সে বিয়ে করে। আমি জানতাম না তারা এত বড় প্রতারক।

তিনি বলেন, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আমাকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। আর জেলে থাকাকালীন বিভিন্ন শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে টাকা পাই। সব মিলিয়ে আমার কাছে ছিল ১৮ লাখ টাকা। সেই টাকা দিয়ে বিয়ে করেই এখন আমি সর্বস্বান্ত হয়েছি। এখন আমার জীবন কীভাবে চলবে, কোথায় থাকবো কিছুই আমি বুঝতে পারছি না। এখন খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছি। অনাহারে জীবন চলছে। কেউ আমাকে খাবার দিলে খাই, না দিলে খাই না।

স্ত্রীর প্রতারণার বিষয়ে শাহজাহান বলেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর আমার বিয়ে হয়। বিয়ের কাবিন পাঁচ লাখ টাকা হলেও আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা স্টাম্পে লিখে নিয়ে আমার স্ত্রী সাথী আক্তারবিয়ের ৫৩ দিনের মাথায় পালিয়ে গেছেন। সে সময় ঘরে থাকা আরও সাত লাখ টাকা ও গহনা নিয়ে পালিয়ে গিয়ে আমার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলে সেই মামলা নেয়নি। বললো বউয়ের নামে মামলা হয় না। পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় গত রোববার (৩১ মার্চ) আদালতে স্ত্রী-শাশুড়িসহ ছয়জনের নামে প্রতারণার মামলা করেছি। আদালত মামলাটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে।

কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে বারবার প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা নেই। দায়িত্ব নেওয়ার মতো ভাই-বোন নেই। আমার থাকার জায়গা নেই। কাজ করার ক্ষমতা নেই, আয় নেই, অর্থের যোগান নেই। ৪৪ বছর কারাভোগের পর বেরিয়ে এসে বারবার প্রতারিত হচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কারাগারের বাইরে জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থাকতাম। আমি কারাগার থেকে বের হলে আমার ভাগিনা নজরুল আমাকে অটোরিকশা কিনে দিবে বলে আমার টাকা মেরে দেন। পরে আমি একটি চায়ের দোকান দিলে, আমার সঙ্গে দোকানে যে ছেলেটি সময় দিতো, সে চার মাস আমার সঙ্গে থাকার পর দোকানে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়।

শাহজাহান বলেন, এখন দুই সংকটের মধ্যেই বসবাস করছি। একে তো আমার অচল অর্থনৈতিক অবস্থা। অন্যদিকে এক নারী আমার জীবনের শেষ জমানো টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন এবং আমাকে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আমাকে থাকার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিন। আমাকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকার জন্য সহজ কর্মের ব্যবস্থা করে দিন। পাশাপাশি তিনি তার প্রতারক স্ত্রী ও শাশুড়িসহ এ চক্রের শাস্তির দাবিও জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টাইমস পিআরের প্রধান নির্বাহী মিজান সোহেল ও শাহজাহানের আইনজীবী ওসমান গণি।

About Nasimul Islam

Check Also

ভয়ভীতি দেখিয়ে মাহিকে বলাৎকার করেন মুক্তারুল, পিবিআই তদন্তে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য

ইফতেখার রশীদ মাহিকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পড়াতেন প্রাইভেট টিউটর মুক্তারুল হক। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *