বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর জন্য এখনো অপেক্ষা করছেন তার স্ত্রী, সন্তান, পরিবারসহ দেশের অগণিত নেতাকর্মী।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ১২ বছর পূর্ণ হলো। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ইলিয়াস আলীকে রাজধানী বনানী ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়।এরপর গাড়িটি পাওয়া গেলেও তাদের হদিস পাওয়া যায়নি। আজ জনগণের সামনে এটা স্পষ্ট যে এই সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম এবং টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সিলেট অঞ্চলের গণআন্দোলনের নেতৃত্বের কারণে ইলিয়াস আলী রাষ্ট্রযন্ত্র এবং দেশি-বিদেশি অপশক্তির গাত্রদাহের প্রধান কারণ ছিল। .
তিনি বলেন, আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন ইলিয়াস আলী। ইলিয়াস আলীর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকার তাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে গুম রেখেছে। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর সরকার অনেক নাটক মঞ্চস্থ করে। এ সময় তার বিরুদ্ধে অশ্লীল কথা লেখা পোস্টার দেয়ালে সাঁটিয়ে দেয় সরকারের দালালরা। নিখোঁজের পর তার স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি টেক্সট বার্তা পাঠানো হয়, যাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয় এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কারণ বিএনপি ওই সময় পাঁচ দিন হরতাল করে। আর সেই মিথ্যা আশ্বাসে বিএনপির হরতাল-আন্দোলন বন্ধ করা হয়েছে। নিখোঁজের পর থানায় জিডি করা হয়, আদালতে মামলা হয়। এরপরও শেখ হাসিনা তাকে ফিরিয়ে দেননি।
তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর মজার নাটক করতে দেখা যায়। হাইকোর্টে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার রিট আবেদনের শুনানিও বন্ধ করে দেয় সরকার। অর্থাৎ নিখোঁজ নাগরিককে ফেরত দিতে হাইকোর্টের নির্দেশে সরকার বাধা দেয়। তাই ইলিয়াস আলীসহ সব গুমকে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বেআইনি গুম-খুনের উৎসব পালন করছেন।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি থেকে তালিকার জন্য হৈচৈ করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব কিসের তালিকা চাইছেন? তালিকাটি আগেই দেওয়া হয়েছিল। তালিকা আপনাদের কাছেই আছে। আইন, আদালত, থানা, পুলিশ আপনাদের হাতে। ওবায়দুল কাদেরের স্নায়ু শিথিল, তার মস্তিষ্ক অলস এবং হৃৎপিণ্ড দুর্বল, তাই তিনি বেশি বেশি অবান্তর কথা বলেন। বিনা ভোটের সরকার অসংখ্য মানুষকে গুম, খুন, গুম করেছে। তাদের মধ্যে নিখোঁজদের তালিকা দিয়েছে জাতিসংঘ। আজ পর্যন্ত বিনা ভোটের সরকার কোনো জবাব দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েলকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। আজ তিনি আদালতে জামিনের আবেদন করলে তাকে জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে তার মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারসহ তার নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।